বেশিদিন আগের ঘটনা নয়। মাত্র ১৭ বছর আগের। এই কয়েকটা বছরের ঘটনা ভুলে যাবার মত নয়, স্মৃতিভ্রমও হওয়ার নয়। বছরটি ছিল ১৯৯৬ সাল। বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিরোধীদলগুলো দেশজুড়ে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বিএনপি একতরফা নির্বাচন করে ১৫ ফেব্রুয়ারি। আওয়ামী আন্দোলন-সংগ্রামের মুখে একপর্যায়ে রাষ্ট্রক্ষমতা ছেড়ে তত্ত্বাবধায়ক মেনে নেয় তৎকালীন সরকার। এসব ছিল স্মরনীয় ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে।১৭ বছরের মাথায় ফের বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন- সংগ্রাম করছে। এই আন্দোলনের পথ সুখকর হবে, এমন আশা করা বোকামীর লক্ষণ ।
সেই ১৭ বছর আগের ঘটনার পর্যালোচনা করতে গেলে দিন পেরুবে কয়েকটা। যদি লেখার চেষ্টা করা হয় তাও কাগজ লাগবে শত শত তা। সে সময়ের আওয়ামী আন্দোলনের ক্যালেন্ডার গুণলে দেখা যায়, তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে অনড় আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক দাবি আদায়ে সফল হওয়ার পূর্ববর্তী ৩ মাস অর্থাৎ ’৯৬ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস সময়কালে হরতাল করেছিল ৩৬ দিন।
অসহযোগ আন্দোলন করেছিল ২৬ দিন আর অবরোধ করেছিল ৯ দিন। সব মিলিয়ে তিন মাসের চূড়ান্ত আন্দোলনের সময় সে সময়ের ক্যালেন্ডারের পাতার ৯০ টি দিনের মধ্যে ৭১ দিনই ছিল আওয়ামী আন্দোলনসংগ্রামের হাতে বন্দী। বন্দিত্ব কাটে তত্ত্বাবধায়ক বিল পাশের মাধ্যমে ।
আওয়ামী আন্দোলনের ক্যালেন্ডারের পাতা ঘেটে দেখা যায়, ৯৬ সালের জানুয়ারি মাসের ১৭ ও ২৯ তারিখে হরতাল পালন করা হয়। একই মাসের ২৪,২৭,২৮তারিখে আঞ্চলিক ভাবে দেশের বিভিন্নস্থানে অবরোধ পালন করা হয়। ফেব্রুয়ারিতে এসে ১,৩,১৩,১৪,১৫ তারিখে অবরোধ করা হয়। একই মাসের ৭,৮,১০ও১৬ তারিখে করা হয় দেশের বিভিন্নস্থানে অঞ্চল ভিত্তিক অবরোধ। এই মাসেই করা হয়,২৪,২৫,২৬ও২৭ তারিখে চারদিনের টানা অসহযোগ কর্মসূচি। মার্চ মাসে এসে আন্দোলন-সংগ্রামের চূড়ান্ত পর্যায়ে ৯ তারিখ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত টানা ২২ দিন অসহযোগ কর্মসূচি পালন করা হয়। এই চূড়ান্ত কর্মসূচিই আওয়ামী দাবির তত্ত্বাবধায়ক চূড়ান্ত রূপ লাভ করে।
No comments:
Post a Comment