দেশের কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে ''পরিকল্পনা আইএসআইয়ের, বাস্তবায়নে সা কা চৌধুরী'' শিরোনামে বিডিআর বিদ্রোহ বিষয়ক একটি 'সংবাদ' নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বলা যায় ঝড়ই উঠেছে।
অনলাইন পোর্টালগুলোর খবরে বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএনের ওয়েবসাইটে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আর তাতে বলা হয়েছে, বিডিআর বিদ্রোহ এবং পিলখানায় হত্যাযজ্ঞের সাথে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই জড়িত। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ''ভারত সরকারের সচিবালয় সাউথ ব্লকের বরাত দিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করেছে সিএনএন।''
''২৯ অক্টোবর সিএনএন-এর আই রির্পোটের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিদ্রোহ হলেও তা করার পরিকল্পনা ছিল আগের দিন। মূল পরিকল্পনা ছিল শেখ হাসিনা এবং সে সময়ের সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদকে হত্যা।''
সিএনএন আইরিপোর্টে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটি পরিবর্তন-এর নজরে আগেই এসেছিল। কিন্তু তা সিএনএনের কোনো যাচাই করা প্রতিবেদন না হওয়ায় পরিবর্তন তা প্রকাশ করেনি।
শুক্রবার দেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে 'খবরটি' প্রকাশিত হওয়ার পর পরিবর্তন বিষয়টি পাঠকের সামনে তুলে ধরার প্রয়োজন বোধ করছে। এখানে কারো পক্ষে সাফাই গাওয়ার কোনো প্রচেষ্টা থাকছে না। বরং সাংবাদিকতার নৈতিকতা বলে যে বিষয়টি আছে সেটির অবনমন হচ্ছে দেখেই এ প্রতিবেদনের অবতারনা।
কথিত সিএনএন প্রতিবেদনটি আসলে তাদের আইরিপোর্ট শাখায় প্রকাশিত হয়েছে। এ শাখাটিতে পাঠকদের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সিএনএন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা যাচাইও করে না। যেসব আইরিপোর্ট সিএনএন যাচাই করে, সেগুলোতে লেখা থাকে 'vetted by cnn' এবং 'cnn iReport'।
cnn iReport কি?
দেখুন এখানে
click here
কিন্তু আলোচ্য প্রতিবেদনের বিষয়ে সিএনএন-এর অনলাইন ভার্সনে লেখা রয়েছে, 'not vetted by cnn' বা 'সিএনএন কর্তৃক যাচাইকৃত নয়'। কিন্তু বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলো প্রতিবেদনটি না বুঝেই সিএনএন-এর নিজস্ব সংবাদ বলে প্রচার করছে।
সিএনএনের আইরিপোর্টে প্রকাশিত 'South Block Suggests Pakistani Intelligence Behind BDR Mutiny'
click here
শীর্ষক এই সংবাদটির প্রতিবেদক হলেন কে এম সালাম। তার ব্যক্তিগত তথ্যে তিনি নিজেকে'আওয়ামী লীগের' রাজনীতির সাথে জড়িত বলে উল্লেখ করেছেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনীতে
click here
তিনি বলেছেন, ১৯৬৬ সাল থেকে তিনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে জাতির পিতার জন্য কাজ করে আসছেন।
সিএনএন-এর ওয়েবসাইটে 'আইরিপোর্ট' সর্ম্পকে বলা হয়েছে, সিএনএন পাঠকদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে এই বিভাগ। বিষয়টিকে নাগরিক সাংবাদিকতা বলা যায়।
আইরির্পোটের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিডিআর বিদ্রোহের পরিকল্পনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী জড়িত ছিলেন। ভারত এবং অন্যান্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে এই ঘটনায় প্রভাবশালী বিএনপি নেতা এবং আইএসআইয়ের চর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জড়িত থাকার প্রমাণ আছে’।
সংবাদে আরো উল্লেখ করা হয়, ''এই পরিকল্পনা এতটাই সূচারু ছিল যে, কোনো গোয়েন্দা সংস্থা তা ধরতে পারেনি। এই ঘটনায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক ফজলুর রহমানকেও ব্যবহার করেন। ফজলুর রহমানকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ৪০ কোটি টাকা দেন বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।''
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনা চলাকালে বাংলাদেশকে নিয়ে ভারত সরকারে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ভারত শেখ হাসিনাকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার প্রস্তুতিও নেয়। ভারতের সে সময়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী (বর্তমান রাষ্ট্রপতি) প্রণব মুখার্জি শেখ হাসিনার সাথে যোগাযোগ রেখেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাদ রসুলের সাথে টেলিফোন কলে আড়ি পেতে তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে গোয়েন্দারা। ওই পাকিস্তানি কর্মকর্তা ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে গোটা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং পাকিস্তানকে সব জানিয়েছেন।
''২৫ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১২টায় সাজ্জাদ রসুল আইএসআই-এর সদর দপ্তরে ফোন করে সে সময় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেন'' বলেও উল্লেখ করা হয়।
http://www.bdtomorrow.com/newsdetail/detail/200/52912
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময় জামায়াতে ইসলামীর বেশ কজন শীর্ষস্থানীয় নেতাও ফোনে দুবাই, লন্ডন এবং ইসলামাবাদে আইএসআই চরদের সাথে ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। গোটা বিদ্রোহে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদও নানা সহযোগিতা করেছেন বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এই রিপোর্টের সত্যাসত্য সিএনএন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যাচাইকৃত না হলেও দেশের পোর্টালগুলো দেদার সেটাকে সিএনএন-এর নিউজ বলে প্রকাশ করছে, যা দেশের অনলাইন সাংবাদিকতার দীনতারই নামান্তর।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭০ জন নিহত হন ।
অনলাইন পোর্টালগুলোর খবরে বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএনের ওয়েবসাইটে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আর তাতে বলা হয়েছে, বিডিআর বিদ্রোহ এবং পিলখানায় হত্যাযজ্ঞের সাথে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই জড়িত। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ''ভারত সরকারের সচিবালয় সাউথ ব্লকের বরাত দিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করেছে সিএনএন।''
''২৯ অক্টোবর সিএনএন-এর আই রির্পোটের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিদ্রোহ হলেও তা করার পরিকল্পনা ছিল আগের দিন। মূল পরিকল্পনা ছিল শেখ হাসিনা এবং সে সময়ের সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদকে হত্যা।''
সিএনএন আইরিপোর্টে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটি পরিবর্তন-এর নজরে আগেই এসেছিল। কিন্তু তা সিএনএনের কোনো যাচাই করা প্রতিবেদন না হওয়ায় পরিবর্তন তা প্রকাশ করেনি।
শুক্রবার দেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে 'খবরটি' প্রকাশিত হওয়ার পর পরিবর্তন বিষয়টি পাঠকের সামনে তুলে ধরার প্রয়োজন বোধ করছে। এখানে কারো পক্ষে সাফাই গাওয়ার কোনো প্রচেষ্টা থাকছে না। বরং সাংবাদিকতার নৈতিকতা বলে যে বিষয়টি আছে সেটির অবনমন হচ্ছে দেখেই এ প্রতিবেদনের অবতারনা।
কথিত সিএনএন প্রতিবেদনটি আসলে তাদের আইরিপোর্ট শাখায় প্রকাশিত হয়েছে। এ শাখাটিতে পাঠকদের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সিএনএন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা যাচাইও করে না। যেসব আইরিপোর্ট সিএনএন যাচাই করে, সেগুলোতে লেখা থাকে 'vetted by cnn' এবং 'cnn iReport'।
cnn iReport কি?
দেখুন এখানে
click here
কিন্তু আলোচ্য প্রতিবেদনের বিষয়ে সিএনএন-এর অনলাইন ভার্সনে লেখা রয়েছে, 'not vetted by cnn' বা 'সিএনএন কর্তৃক যাচাইকৃত নয়'। কিন্তু বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলো প্রতিবেদনটি না বুঝেই সিএনএন-এর নিজস্ব সংবাদ বলে প্রচার করছে।
সিএনএনের আইরিপোর্টে প্রকাশিত 'South Block Suggests Pakistani Intelligence Behind BDR Mutiny'
click here
শীর্ষক এই সংবাদটির প্রতিবেদক হলেন কে এম সালাম। তার ব্যক্তিগত তথ্যে তিনি নিজেকে'আওয়ামী লীগের' রাজনীতির সাথে জড়িত বলে উল্লেখ করেছেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনীতে
click here
তিনি বলেছেন, ১৯৬৬ সাল থেকে তিনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে জাতির পিতার জন্য কাজ করে আসছেন।
সিএনএন-এর ওয়েবসাইটে 'আইরিপোর্ট' সর্ম্পকে বলা হয়েছে, সিএনএন পাঠকদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে এই বিভাগ। বিষয়টিকে নাগরিক সাংবাদিকতা বলা যায়।
আইরির্পোটের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিডিআর বিদ্রোহের পরিকল্পনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী জড়িত ছিলেন। ভারত এবং অন্যান্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে এই ঘটনায় প্রভাবশালী বিএনপি নেতা এবং আইএসআইয়ের চর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জড়িত থাকার প্রমাণ আছে’।
সংবাদে আরো উল্লেখ করা হয়, ''এই পরিকল্পনা এতটাই সূচারু ছিল যে, কোনো গোয়েন্দা সংস্থা তা ধরতে পারেনি। এই ঘটনায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক ফজলুর রহমানকেও ব্যবহার করেন। ফজলুর রহমানকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ৪০ কোটি টাকা দেন বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।''
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনা চলাকালে বাংলাদেশকে নিয়ে ভারত সরকারে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ভারত শেখ হাসিনাকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার প্রস্তুতিও নেয়। ভারতের সে সময়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী (বর্তমান রাষ্ট্রপতি) প্রণব মুখার্জি শেখ হাসিনার সাথে যোগাযোগ রেখেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাদ রসুলের সাথে টেলিফোন কলে আড়ি পেতে তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে গোয়েন্দারা। ওই পাকিস্তানি কর্মকর্তা ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে গোটা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং পাকিস্তানকে সব জানিয়েছেন।
''২৫ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১২টায় সাজ্জাদ রসুল আইএসআই-এর সদর দপ্তরে ফোন করে সে সময় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেন'' বলেও উল্লেখ করা হয়।
http://www.bdtomorrow.com/newsdetail/detail/200/52912
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময় জামায়াতে ইসলামীর বেশ কজন শীর্ষস্থানীয় নেতাও ফোনে দুবাই, লন্ডন এবং ইসলামাবাদে আইএসআই চরদের সাথে ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। গোটা বিদ্রোহে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদও নানা সহযোগিতা করেছেন বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এই রিপোর্টের সত্যাসত্য সিএনএন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যাচাইকৃত না হলেও দেশের পোর্টালগুলো দেদার সেটাকে সিএনএন-এর নিউজ বলে প্রকাশ করছে, যা দেশের অনলাইন সাংবাদিকতার দীনতারই নামান্তর।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭০ জন নিহত হন ।
No comments:
Post a Comment