স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে স্বাগত জানাতে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত প্রখর রোদের মধ্যে রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়েছিল স্কুলপড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। প্রচণ্ড গরমে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে শিক্ষার্থীরা। অনেককে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষক ও অভিভাবকরা কানাঘুষা করলেও কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে পরীক্ষার সময় পরিবর্তন করে এবং ক্লাস বাদ দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে রেখে এভাবে মন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর ফলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। গতকাল দুপুরে খুলনার বয়রাস্থ মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে এ ঘটনাটি ঘটে। আয়োজকরা জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের আগমনকে কেন্দ্র করে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও রং-বেরঙের পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছিল। কেএমপির নতুন তিন থানা লবণচরা, হরিণটানা ও আড়ংঘাটার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের জন্য। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বয়রা পুলিশ লাইনে সকাল ১১টায় ওই তিন থানার ফলক উন্মোচন করার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত হন ১২টা ৪০ মিনিটে। তার আগমন উপলক্ষে মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন স্কুলের মিডটার্ম পরীক্ষার সময় পরিবর্তন করে সকাল সাড়ে আটটা থেকে দশটায় করা হয়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই শিক্ষার্থীদের পুলিশ লাইনের রাস্তার দু’পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রাখা হয়। এদের মধ্যে দুপুর ১২টায় সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী রাবেয়া আক্তার ঝুমা প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে কেএমপি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় সহপাঠীরা অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়ে। এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মিডটার্ম পরীক্ষা থাকার কারণে বাচ্চারা অনেকেই সকালে না খেয়ে আসছে। তাই দুর্বলতায় সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ঝুমা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের পরিচালিত স্কুল হওয়ার কারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকা আমাদের নির্দেশ ছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর খুলনার বয়রা পুলিশ লাইনে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ আয়োজিত নবগঠিত লবণচরা, হরিণটানা এবং আড়ংঘাটা থানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে। কেএমপি কমিশনার মো. সফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। বক্তৃতা করেন খুলনা চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি-এর সভাপতি কাজী আমিনুল হক ও পুলিশিং কমিটির সভাপতি লিয়াকত আলী। এ সময় অন্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য ননী গোপাল মণ্ডল, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. ফায়েকুজ্জামান, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ হারুনুর রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা রশিদী সুজা, পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (ফাইন্যান্স) আবুল কাশেম, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি, খুলনা জেলা প্রশাসক এবং খুলনা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
No comments:
Post a Comment