Tuesday 7 January 2014

নির্বাচনোত্তর আওয়ামী সহিংসতার শিকার আ.লীগ : মোরেলগঞ্জে মাদরাসা অধ্যক্ষের রগকর্তন, কালীগঞ্জে ১০ কর্মীর বাড়িঘর ভাংচুর লুট মাগুরায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষ, পলাশে কৃষি কর্মকর্তাকে পিটুনি


আওয়ামী লীগের বহিষ্কুত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে এক মাদরাসা অধ্যক্ষের হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে ছাত্রলীগ লীগ সন্ত্রাসীরা। বাধা দিতে গেলে কুপিয়ে জখম করা হয় ৩ মাহিলাকেও। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে নৌকায় ভোট দেয়ায় ১০ আওয়ামী লীগ কর্মীর বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাট করেছে একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকেরা।
মাগুরায় বিতর্কিত নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী ড. সিরাজুল আকবরের
সমর্থক ও পরাজিত যুবলীগ নেতা কুতুব উল্লাহ কুটির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হয় ১৩ জন। জাল ভোট দিতে না দেয়ায় নরসিংদীর পলাশে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে তার কার্যালয়ে ঢুকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে একই দলের সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয় ৮ নেতাকর্মী। এছাড়া সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় পিটিয়ে আহত করা হয়েছে দুই বিএনপি নেতাকে।
মাগুরায় জয়ী আ.লীগ ও পরাজিত যুবলীগ নেতার সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ
মাগুরা প্রতিনিধি জানান, নির্বাচনী উত্তর সহিংসতায় মাগুরার রবিশাট এবং কুকনা গ্রামে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১৩ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ৮ জনকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার বরিশাট গ্রামে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত এমপি ডা. সিরাজুল আকবরের সমর্থক এবং পরাজিত যুবলীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী কুতুব উল্লাহ হোসেন মিয়া কুটি’র সমর্থকদের মধ্যে কথাকাটাটি নিয়ে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়।
এদের মধ্যে গুরুতর জখম গোলাম রসুল (৪০), আজিমুল ইসলাম (৩০), লুত্ফার রহমান (৩০), রসুল মিয়া (৪৫), আনজাব আলী (৬০)-কে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে পৌর এলাকার কুকনা গ্রামে দু-পক্ষের সংঘর্ষে আহত ইব্রাহিম বিশ্বাস (৬০), টিটুল মোল্যা (৩৫) ও রজব আলীকে (২৫) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পলাশে কৃষি কর্মকর্তাকে পিটিযে আহত
নরসিংদী প্রতিনিধি জানান, নরসিংদীর পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে সন্ত্রাসীরা বর্বর হামলা চালিয়েছে। হামলায় কৃষি কর্মকতা গুরুতর আহত হয়ে এখন হাসপাতালে।
পলাশ উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, গতকাল সকালে অফিস চলাকালীন ২০/২৫ জনের একদল সন্ত্রাসী মোটরসাইকেলযোগে গিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় ঘোড়াশাল পৌরসভার দায়িত্বে নিয়োজিত উপজেলা কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা সাদন চন্দ্র সরদার গুরুতর আহত হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে আশপাশের কর্মকর্তা কর্মচারীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। অফিসের অন্য কর্মচারীরা আহত কর্মকর্তাকে পলাশ উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় পলাশ থানা পুলিশ সরেজমিন পরির্দশন করে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইসহাক জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এই ঘটনায় পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাছিমা খানম দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের উপজেলার ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় সবার ছবি বেরিয়ে আসছে। পুলিশ অনেককে চিনেছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলার অভ্যন্তরে অফিসে ঢুকে এমন বর্বর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপজেলার কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, হামলার শিকার উপজেলা কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা সাধন চন্দ্র সরদার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী-২ পলাশ আসনের একটি ভোট কেন্দ্রে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় এক প্রার্থীর লোকজন অবৈধভাবে ভোট দিতে গেলে তাদের সুযোগ না দেয়ায় হামলাকারীরা ক্ষিপ্ত হয়। এরই জের হিসেবে সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটায় ।
মোরেলগঞ্জে মাদরাসা অধ্যক্ষের হাত-পায়ের রগ কর্তন
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটের পল্লীতে নির্বাচনোত্তর সহিংসতার শিকার হয়েছেন মোরেলগঞ্জের মাওলানা আবদুল বারী নামে এক মাদরাসা অধ্যক্ষ। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তার দুই হাত ও পায়ের রগ কেটে দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের গুলিশাখালি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মাওলানা আবদুল বারী গুলিশাখালি ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে পার্শ্ববর্তী মংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিত্সার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল বারীর পরিবারের সদস্যরা জানান, সংসদ নির্বাচনের জের হিসেবে অধ্যক্ষ আবদুল বারী মাদরাসায় অবস্থানকালীন সময় ছাত্রলীগের একদল সশস্ত্র ক্যাডার তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর জখম অবস্থায় আত্মরক্ষার্থে তিনি পাশে লুত্ফর হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করেন। পরে ওই ছাত্রলীগ ক্যাডাররা সেখানে গিয়ে তার ওপর হামলা চালায় এবং প্রকাশ্যে তার দু’হাত ও দু’পায়ের রগ কেটে দেয়। এ সময় ওই বাড়ির মহিলারা তাকে উদ্ধার করতে এলে তাদের ওপরও হামলা চালায় সশস্ত্র ক্যাডাররা। এতে ৩ মহিলাসহ অন্তত ৬ জন আহত হয়। আহত আবদুল বারী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি ও পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজি ড. আবদুর রহিম খানের পক্ষে কাজ করায় তার ওপর এ হামলার ঘটনা বলে আহত মাওলানা বারীর পরিবার সূত্র জানায়।
অপর একটি সূত্র জানায়, পূর্ব শত্রুতার জের হিসাবে প্রতিবেশী জনৈক মাওলানার ইন্ধনে ছাত্রলীগের একটি সশস্ত্র গ্রুপ এ নৃশংস ঘটনা ঘটায়।
এদিকে এই ঘটনায় জেলা ১৮ দলীয় জোটের নেতা অধ্যক্ষ মাওলানা মশিউর রহমান, অ্যাডভোকেট
শেখ আবদুল ওয়াদুদ, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন প্রমুখ নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কেশবপুরে গ্রেফতার ১৩
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি জানান, যশোরের কেশবপুরে নির্বাচনোত্তর সহিংসতার ঘটনায় বিএনপি জামায়াতের ১৩ নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ লুত্ফর রহমান জানান, গতকাল সকালে পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্রের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলার গড়ভাঙা বাজারে সহিংসতার ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে গড়ভাঙা গ্রামের মাসুদুর রহমান, শাহাদাত্ হোসেন, আকরামুজ্জামান, ইদ্রিস আলী, ইব্রাহিম হোসেন, ইমাননগর গ্রামের আতাউর রহমান, তাজামুল ইসলাম, মাদারডাঙা গ্রামের লুত্ফর রহমান, বেলকাটি গ্রামের মনির হোসেন, সাগরদত্তকাটি গ্রামের শহিদুল ইসলাম, মুজগুন্নি গ্রামের হুমায়ুন কবীর ও ভালুকঘর গ্রামের আবদুস সামাদ মোল্যাকে আটক করা হয়।
গত ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনোত্তরকালে গড়ভাঙা বাজারে সহিংসতার ঘটনায় দোকানপাট ও গুদামে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী পাঁজিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেম্বার আবদুল আহাদ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন, যার নম্বর ৫।
ধর্মপাশায় বিএনপি নেতা ও এক ব্যবসায়ীকে পেটালো যুবলীগ
ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আলী ভুট্টো ও বাদশাগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী বিএনপির সমর্থক বকুল মিয়াকে স্থানীয় যুবলীগ নেতাকর্মীরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বাদশাগঞ্জ বাজারে এ ঘটনা ঘটে ।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের বাদশাগঞ্জ বাজারে সেলবরষ ইউনিয়নের বিএনপি কর্মী শরিশ্যাম গ্রামের বাসিন্দা বকুল মিয়ার একটি মনোহারি দোকান রয়েছে। গতকাল দুপুরে তিনি তার দোকান খুলে বসেন। এ সময় সেলবরষ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সবুজ মিয়া ওরফে কাছা আবুর নেতৃত্বে জ্জ জন নেতাকর্মী তার দোকানের সামনে গিয়ে শরিশ্যাম বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে আগুন দেয়ার সঙ্গে জড়িত বলে তাকে গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে দোকানের ভেতরে ঢুকে তাকে কিল-ঘুষি মারেন যুবলীগ নেতাকর্মীরা । এ সময় সেখানে উপস্থিত থাকা জেলা বিএনপির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও মাটিকাটা গ্রামের বাসিন্দা জুলফিকার আলী ভুট্টো প্রতিবাদ করলে তার মাথায় কাঠের ছটি দিয়ে আঘাত করে তারা। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিত্সকরা তাকে উন্নত চিকিত্সার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
এ ঘটনার খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবসী বাদশাগঞ্জ বাজারে গেলে যুবলীগ কর্মীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে বিকালে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল ধর্মপাশা সদর বাজার ও বাদশাগঞ্জ বাজারে অনুষ্ঠিত হয়।
ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি সবুজ মিয়া ওরফে কাছা আবু বলেন, শরিশ্যাম বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে আগুন দেয়ার সঙ্গে বকুল মিয়া জড়িত থাকায় এ নিয়ে বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা ঘটেছে । এ বিষয়ে তিনি আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
বকুল মিয়া জানান, ভোটকেন্দ্রে আগুন দেয়ার সঙ্গে আমি জড়িত নই। বিএনপি করি বলেই আমাকে দোকান খুলতে দেয়নি। তারা অন্যায়ভাবে আমার ওপর এ হামলা করেছে।
জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তারা আমাকে মারধর করেছে।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বায়েছ আলম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এ সংক্রান্ত কোনো লিখিত অভিযোগ এখনও পাইনি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।
ঝিনাইদহে নৌকায় ভোট দেয়ায় ১০ আ.লীগ কর্মীর বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাট
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি জানান, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ঝিনাইদহ পৌর এলাকার কালিকাপুর গ্রামে ১০ আওয়ামী লীগ সমর্থকের দোকানপাট-বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করেছে একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন। এ সময় বাড়ির মহিলাদের হকিস্টিক দিয়ে মারধর করা হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঘটনার পর বিষয়টি স্থানীয় থানায় অবহিত করা হলেও কোনো পুলিশ সহযোগিতার জন্য আসেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গ্রামের হায়দার আলী, জব্বার আলী, শহিদুল ইসলাম, ফারুক হোসেন, কনক কুমার, মিজানুর রহমান, বিপ্লব হোসেন, টিপু সুলতান, ইমামুল ইসলামসহ বিভিন্ন ব্যক্তির বাড়িঘরে হামলা চালায় ৩০/৪০ জন সন্ত্রাসী। তারা আসবাবপত্র, মোটসাইকেল, ইজিবাইক, টিভি, ফ্রিজ সহ মূল্যবান জিনিসপত্র ভাংচুর করে। এ ঘটনায় পর কালিকাপুর গ্রামের শতাধিক মানুষ ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার ‘অপরাধে’ ঝিনাইদহ-২ আসনের নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমির সমর্থকরা এই সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা সবাই পরাজিত আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সফিকুল ইসলাম অপুর সমর্থক। আমেনা খাতুন নামে এক মহিলা বলেন, শুধু নৌকার ভোট দেয়ার কারণে হকিস্টিক দিয়ে ওরা আমাকে পিটিয়েছে। গুলি করতে চেয়েছে।
ফাতেমা খাতুন নামে অপর এক মহিলা বলেন, বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে শোকেসের ড্রয়ার ভেঙে নগদ ৫০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে গেছে ওরা। সোহান, রনি, জীবন ও তুষার নামে চারজনের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জন বাড়িঘরে হামলা চালায় বলে তিনি অভিযোগ করেন। বতর্মানে বাড়িঘরে থাকা মহিলারা আবারও হামলার আশঙ্কায় চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
জানতে চাইলে সদর থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি।
মানিকছড়িতে আ.লীগের হামলায় বিএনপির ৮ নেতাকর্মী আহত
মাটিরাঙা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি জানান, খাগড়াছড়িতে নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশের পর থেকে বিভিন্ন উপজেলায় শুরু হয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মারধর ও পুলিশি ধরপাকড়।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় মানিকছড়ি উপজেলায় তিনট্যহরী গুচ্ছগ্রাম, মুহামনী, মানিকছড়ি সদরে আওয়ামী লীগের দফায় দফায় হামলার ঘটনায় বিএনপির অন্তত ৮ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপির বিভিন্ন পোস্টার-ব্যানার, ফেস্টুন খুলে নিয়ে আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
আ.লীগের হামলায় মুহামুনীতে, আয়নাল হক, মনসুর আহম্মদ, আলমগীর হোসেন, মানিকছড়ি বজার এলাকায় জয়নাল মিস্ত্রি, সেম্পুপাড়া ওয়ার্ড যুবদল সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ ও তিনট্যহরী গুচ্ছগ্রামের আলী হোসেন, রফিকসহ ৮ বিএনপি নেতাকর্মী আহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনট্যহরী গুচ্ছগ্রাম এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মী আহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মানিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেশব চক্রবর্তী সোমবারে হামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, আজ কোনো ধরনের হামলার কথা আমার জানা নেই। তবে মানিকছড়িতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ফলাফল ঘোষণার পর সোমবারও মানিকছড়ি, মাটিরাঙা ও পানছড়ি উপজেলায় আ.লীগ-বিএনপি উভয়পক্ষের ২০ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

No comments:

Post a Comment