নিউইয়র্কভিত্তিক বিশ্বখ্যাত মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের বিচার ছিল অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ (ডিপলি ফ্লড) এবং বিচারে আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করা হয়নি।
গতকাল সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়, ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও বিচারপতিরা ছিলেন পক্ষপাতদুষ্ট। বিচারপতিরা অন্যায়ভাবে প্রসিকিউশনের হয়ে তদন্ত করেছেন এবং রায়ে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া বিভাগের পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘১৯৭১ সালে সংঘটিত নির্মমতার বিচার দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। তবে অর্থপূর্ণ বিচার করতে হলে তা হতে হবে স্বচ্ছ এবং আন্তর্জাতিক
মান অনুযায়ী।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলাম যে (যুদ্ধাপরাধের বিচারের) আইন ও বিচার প্রকিয়া ছিল ত্রুটিপূর্ণ। কিন্তু সরকার আমাদের কথায় কান দেয়নি। সরকার যে রায় চেয়েছিল তারা তা-ই পেয়েছে। কিন্তু তারা স্বচ্ছ বিচার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। গোলাম আযমের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করা যায়নি।’
হত্যা, নির্যাতন, ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা, অপরাধে সহায়তা ও উসকানির অভিযোগে গত ১৫ জুলাই গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেয় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আদালত বলেছে, বয়সের বিবেচনায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়নি। তবে তার মৃত্যুদণ্ড চেয়ে সুপ্রিমকোর্টে আপিল করেছে সরকার।
বিবৃতিতে বলা হয়, এইচআরডব্লিউ গোলাম আযমের রায় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। কারণ—১. প্রসিকিউশনের পক্ষ হয়ে তদন্ত কাজ পরিচালনা করেছেন (ট্রাইব্যুনালের) বিচারপতিরা; ২. প্রসিকিউটর ও বিচারপতিদের মধ্যে পক্ষপাত ও অশুভ আঁতাত ছিল; ৩. অভিযুক্তদের সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতা ছিল; ৪. বিচাররক প্যানেলে পরিবর্তন, এবং ৫. সন্দেহাতীতভাবে অপরাধ প্রমাণে ব্যর্থতা।
বিবৃতিতে বলা হয়, সবচেয়ে গুরুতর সমস্যা হলো বিচারপতিরা বলেছেন প্রসিকিউশন পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে না পারায় তারা নিজেরাই তদন্ত কাজ চালিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশে বিচারপতিদের ক্ষমতা হলো তাদের সামনে মামলার বাদী ও বিবাদীরা যেসব প্রমাণাদি হাজির করেন তার ভিত্তিতে বিচারকার্য পরিচালনা করা।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিচারপতিরা যে তদন্ত কাজ পরিচালনা করেছেন সে সম্পর্কে অভিযুক্তদের আইনজীবীরা অবহিত না থাকায় তারা বিচারপতিদের প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে মন্তব্য করতে কিংবা একে চ্যালেঞ্জ করতে পারেননি। এ তদন্ত আদালতের নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্কাইপ কেলেঙ্কারিতে বিচারপতিদের পক্ষপাত নিয়ে যেসব অভিযোগ ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টে ছাপা হয়েছে সেসব অভিযোগের কোনো জবাব দেয়নি ট্রাইব্যুনাল। স্কাইপ সংলাপে (আদালতের) বাইরের একজন পরামর্শকের সঙ্গে বিচার বিভাগ, প্রসিকিউশন ও নির্বাহী বিভাগের শলা-পরামর্শের বিষয়টি ফাঁস করে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে স্কাইপ কেলেঙ্কারির কাহিনী প্রথম প্রকাশ করে ইকোনমিস্ট। এরপর আমার দেশ সংলাপের ট্রান্সক্রিপ্ট প্রকাশ করলে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এতে দেখা যায়, যুদ্ধাপরাধের বিচার ও রায় নিয়ে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বেলজিয়াম প্রবাসী ঘাদানিক নেতা আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করছেন। এমনকি বিচার শেষ হওয়ার আগেই রায় নিয়েও তাদের মধ্যে ই-মেইল লেনদেন হয়। এ ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেন নিজামুল হক।
তবে সেই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ১১ এপ্রিল আমার দেশ-এর মজুলম সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার এবং বন্ধ করে দেয়া হয় দেশের বহুল প্রচারিত দৈনিকটির প্রকাশনা।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্কাইপ সংলাপের অনেকাংশ জুড়ে ছিল গোলাম আযমের বিষয়টি। দেখা যায় বিচারপতিরা নীলনকশা করছে যে কিভাবে বিচার পরিচালনা করা হবে, কোনো সাক্ষীকে ডাকা হবে এবং তাদের কী প্রশ্ন করা হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্কাইপ সংলাপে স্পষ্ট যে গোলাম আযমের মামলার বিষয়ে বিচারপতিদের নিবিড়ভাবে পরামর্শ এবং নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, গোলাম আযমসহ অভিযুক্তদের পক্ষের সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয় এবং তাদের আইনজীবীদের চেম্বারে হানা দেয়া হয়। অভিযুক্তদের সাক্ষীরা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও বিষয়টির তদন্ত কিংবা তাদের নিরাপত্তার জন্য কোনো বাস্তবভিত্তিক নির্দেশনা দেয়া হয়নি।’
বিবৃতিতে ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘গোলাম আযমের বিচার নিয়ে সমস্যা বহুমুখী এবং এর ফলে অবশ্যম্ভাবীভাবে এ উপসংহারে উপনীত হওয়া যায় যে, বিচারপতিরা ছিলেন ভীষণভাবে পক্ষপাতদুষ্ট এবং এতে যথাযথ প্রক্রিয়ার গুরুতর লঙ্ঘন ছিল।’ তিনি বলেন, ‘ন্যায় ও স্বচ্ছ বিচারের মাধ্যমেই কেবল ভিকটিম ও তাদের পরিবারের উপযুক্ত জবাব দেয়া সম্ভব।’
প্রভাবশালী এই মানবাধিকার সংগঠনটির এ বিবৃতি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও তার বিচার প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতার ওপর একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগেই বিশ্বের প্রায় সব মানবাধিকার সংগঠন এবং প্রভাবশালী গণমাধ্যম ট্রাইব্যুনালকে ‘বিতর্কিত’ বলে মন্তব্য করে আসছে। তাছাড়া বিশ্বের অন্যান্য যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গঠিত হলেও বাংলাদেশের ট্রাইব্যুনালকে স্বীকৃতি দেয়নি এ বিশ্বসংস্থাটি। উপরন্তু বিভিন্ন সময় বিচারের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে কড়া সমালোচনা করেছে তারা।
গতকাল সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়, ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও বিচারপতিরা ছিলেন পক্ষপাতদুষ্ট। বিচারপতিরা অন্যায়ভাবে প্রসিকিউশনের হয়ে তদন্ত করেছেন এবং রায়ে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া বিভাগের পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘১৯৭১ সালে সংঘটিত নির্মমতার বিচার দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। তবে অর্থপূর্ণ বিচার করতে হলে তা হতে হবে স্বচ্ছ এবং আন্তর্জাতিক
মান অনুযায়ী।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলাম যে (যুদ্ধাপরাধের বিচারের) আইন ও বিচার প্রকিয়া ছিল ত্রুটিপূর্ণ। কিন্তু সরকার আমাদের কথায় কান দেয়নি। সরকার যে রায় চেয়েছিল তারা তা-ই পেয়েছে। কিন্তু তারা স্বচ্ছ বিচার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। গোলাম আযমের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করা যায়নি।’
হত্যা, নির্যাতন, ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা, অপরাধে সহায়তা ও উসকানির অভিযোগে গত ১৫ জুলাই গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেয় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আদালত বলেছে, বয়সের বিবেচনায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়নি। তবে তার মৃত্যুদণ্ড চেয়ে সুপ্রিমকোর্টে আপিল করেছে সরকার।
বিবৃতিতে বলা হয়, এইচআরডব্লিউ গোলাম আযমের রায় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। কারণ—১. প্রসিকিউশনের পক্ষ হয়ে তদন্ত কাজ পরিচালনা করেছেন (ট্রাইব্যুনালের) বিচারপতিরা; ২. প্রসিকিউটর ও বিচারপতিদের মধ্যে পক্ষপাত ও অশুভ আঁতাত ছিল; ৩. অভিযুক্তদের সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতা ছিল; ৪. বিচাররক প্যানেলে পরিবর্তন, এবং ৫. সন্দেহাতীতভাবে অপরাধ প্রমাণে ব্যর্থতা।
বিবৃতিতে বলা হয়, সবচেয়ে গুরুতর সমস্যা হলো বিচারপতিরা বলেছেন প্রসিকিউশন পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে না পারায় তারা নিজেরাই তদন্ত কাজ চালিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশে বিচারপতিদের ক্ষমতা হলো তাদের সামনে মামলার বাদী ও বিবাদীরা যেসব প্রমাণাদি হাজির করেন তার ভিত্তিতে বিচারকার্য পরিচালনা করা।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিচারপতিরা যে তদন্ত কাজ পরিচালনা করেছেন সে সম্পর্কে অভিযুক্তদের আইনজীবীরা অবহিত না থাকায় তারা বিচারপতিদের প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে মন্তব্য করতে কিংবা একে চ্যালেঞ্জ করতে পারেননি। এ তদন্ত আদালতের নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্কাইপ কেলেঙ্কারিতে বিচারপতিদের পক্ষপাত নিয়ে যেসব অভিযোগ ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টে ছাপা হয়েছে সেসব অভিযোগের কোনো জবাব দেয়নি ট্রাইব্যুনাল। স্কাইপ সংলাপে (আদালতের) বাইরের একজন পরামর্শকের সঙ্গে বিচার বিভাগ, প্রসিকিউশন ও নির্বাহী বিভাগের শলা-পরামর্শের বিষয়টি ফাঁস করে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে স্কাইপ কেলেঙ্কারির কাহিনী প্রথম প্রকাশ করে ইকোনমিস্ট। এরপর আমার দেশ সংলাপের ট্রান্সক্রিপ্ট প্রকাশ করলে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এতে দেখা যায়, যুদ্ধাপরাধের বিচার ও রায় নিয়ে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বেলজিয়াম প্রবাসী ঘাদানিক নেতা আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করছেন। এমনকি বিচার শেষ হওয়ার আগেই রায় নিয়েও তাদের মধ্যে ই-মেইল লেনদেন হয়। এ ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেন নিজামুল হক।
তবে সেই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ১১ এপ্রিল আমার দেশ-এর মজুলম সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার এবং বন্ধ করে দেয়া হয় দেশের বহুল প্রচারিত দৈনিকটির প্রকাশনা।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্কাইপ সংলাপের অনেকাংশ জুড়ে ছিল গোলাম আযমের বিষয়টি। দেখা যায় বিচারপতিরা নীলনকশা করছে যে কিভাবে বিচার পরিচালনা করা হবে, কোনো সাক্ষীকে ডাকা হবে এবং তাদের কী প্রশ্ন করা হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্কাইপ সংলাপে স্পষ্ট যে গোলাম আযমের মামলার বিষয়ে বিচারপতিদের নিবিড়ভাবে পরামর্শ এবং নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, গোলাম আযমসহ অভিযুক্তদের পক্ষের সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয় এবং তাদের আইনজীবীদের চেম্বারে হানা দেয়া হয়। অভিযুক্তদের সাক্ষীরা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও বিষয়টির তদন্ত কিংবা তাদের নিরাপত্তার জন্য কোনো বাস্তবভিত্তিক নির্দেশনা দেয়া হয়নি।’
বিবৃতিতে ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘গোলাম আযমের বিচার নিয়ে সমস্যা বহুমুখী এবং এর ফলে অবশ্যম্ভাবীভাবে এ উপসংহারে উপনীত হওয়া যায় যে, বিচারপতিরা ছিলেন ভীষণভাবে পক্ষপাতদুষ্ট এবং এতে যথাযথ প্রক্রিয়ার গুরুতর লঙ্ঘন ছিল।’ তিনি বলেন, ‘ন্যায় ও স্বচ্ছ বিচারের মাধ্যমেই কেবল ভিকটিম ও তাদের পরিবারের উপযুক্ত জবাব দেয়া সম্ভব।’
প্রভাবশালী এই মানবাধিকার সংগঠনটির এ বিবৃতি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও তার বিচার প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতার ওপর একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগেই বিশ্বের প্রায় সব মানবাধিকার সংগঠন এবং প্রভাবশালী গণমাধ্যম ট্রাইব্যুনালকে ‘বিতর্কিত’ বলে মন্তব্য করে আসছে। তাছাড়া বিশ্বের অন্যান্য যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গঠিত হলেও বাংলাদেশের ট্রাইব্যুনালকে স্বীকৃতি দেয়নি এ বিশ্বসংস্থাটি। উপরন্তু বিভিন্ন সময় বিচারের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে কড়া সমালোচনা করেছে তারা।
No comments:
Post a Comment