Tuesday 2 July 2013

আ’লীগের সাড়ে ৪ বছরে খুন ১৯ হাজার; বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ৬৬১

Khun
বর্তমান মহাজোট সরকারের সাড়ে ৪ বছরে (জানুয়ারি ২০০৯- জুন ২০১৩ পর্যন্ত) দেশে অন্তত ১৮ হাজার ৬৬৩টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। রাজনৈতিক হত্যার  শিকার হয়েছেন ১ হাজার ১১২ জন। এছাড়া  এ সময়ে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৬৬১ জন। বেসরকারি সংস্থা অধিকার, সেন্টার ফর মিডিয়া রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এমআরটি) ও বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
খুন ১৮৬৬৩
বর্তমান সরকারের সাড়ে ৪ বছরে সারা দেশে খুনের ঘটনা ঘটেছে অন্তত ১৮ হাজার ৬৬৩টি। সে হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ১১ জনেরও বেশি খুন হয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০৯ সালে সারা দেশে ৪ হাজার ২১৯ জন, ২০১০ সালে ৩ হাজার ৯৮৮ জন, ২০১১ সালে ৩ হাজার ৯৭০ জন, ২০১২ সালের ৪ হাজার ৪১২ জন এবং ২০১৩ সালে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে ২ হাজার ৭৪ জন খুন হয়েছেন।
একনজরে
২০০৯ সালে ৪২১৯ জন
২০১০ সালে ৩৯৮৮ জন
২০১১ সালে ৩৯৭০ জন
২০১২ সালে ৪৪১২ জন
২০১৩ সালে ২০৭৪ জন (জুন পর্যন্ত ৬ মাসে)
আলোচিত কিছু হত্যাকান্ড
আলোচিত হত্যাকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে-
সাগর-রুনি হত্যা
ঢাকায় সংসদ ভবন এলাকায় যুবলীগ নেতা ইব্রাহীম হত্যা
যাত্রাবাড়ীতে ব্যবসায়ী দম্পতিসহ ট্রিপল মার্ডার
গুলশানে বাসায় ঢুকে মা ও মেয়েকে গুলি করে হত্যা
মগবাজারে যুবলীগ নেতা ইউসুফ আলী সরদার হত্যা
খিলগাঁওয়ে প্রকৌশলী হত্যা
মহাখালীতে কর্মচারী নেতা সিদ্দিকুর রহমান হত্যা
খিলগাঁওয়ে গৃহবধূ কণিকা হত্যা
মিরপুরে ইডেন কলেজের ছাত্রী মেনকা হত্যা
স্বর্ণ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান হত্যা।
এসব হত্যা নগরবাসীর মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।
রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত ১১১২ জন
বর্তমান সরকারের সাড়ে ৪ বছরে সারা দেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ১১১২ জন। আহত হয়েছেন ৬৪ হাজার ১৫৩ জন। প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন আহত হয়েছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলে গ্রুপিংয়ের কারণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুধু আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিহত হয়েছেন ১৬৮ জন।
একনজরে
২০০৯ সালে ২৫১ জন
২০১০ সালে ২২০ জন
২০১১ সালে ১৩৫ জন
২০১২ সালে ১৮৪ জন
২০১৩ সালে ৩২২ জন (জুন পর্যন্ত ৬ মাসে)
ক্ষমতাসীনদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিহত ১৬৮ জন
২০০৯ সালে ৩৮ জন
২০১০ সালে ৩৮ জন
২০১১ সালে ৩৮ জন
২০১২ সালে ৩৯ জন
২০১৩ সালে ১৫ জন (জুন পর্যন্ত ৬ মাসে)
২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ ক্যাডারা নিজ সংগঠনের নেতা যুবায়েরকে হত্যা করে। সর্বশেষ ডিসেম্বর মাসে রাজধানীতে বিরোধীজোটের অবরোধের সময় ছাত্রলীগের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন নিরীহ পথচারী বিশ্বজিৎ।
বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ড : ৬৬১
বর্তমান সরকারের সাড়ে ৪ বছরে সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মৃত্যু হয়েছে ৬৬১ জনের। অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে ১২ জনেরও অধিক বিচার-বহির্ভুত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই কথিত ক্রসফায়ার বা এনকাউন্টারে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
এছাড়া বিরোধীদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা ও হামলা ছিল লক্ষ্যণীয়। বিশেষ করে বিগত বছরের প্রথম ও শেষ দিকে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বিরোধী জোটের পূর্বঘোষিত মিছিলে পুলিশের গুলিতে ৪ জন এবং ৩০ জানুয়ারি রাজশাহীতে ১ জন নিহত হন। সর্বশেষ বিরোধীদের মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় শিবির কর্মী মুজাহিদ। ৬০টি ঘটেছে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণাকে কেন্দ্র করে। দেশ জুড়ে বিক্ষুব্ধ জনতার মিছিলে পুলিশের নির্বিচারে গুলি বর্ষণে এসব লোক মারা যান। নিহতদের বেশির ভাগই বিরোধীদলীয় কর্মী ও সাধারণ মানুষ বলে এমআরটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
একনজরে
২০০৯ সালে ১৫৪ জন
২০১০ সালে ১২৭ জন
২০১১ সালে ৮৪ জন
২০১২ সালে ৯৪ জন
২০১৩ সালে ২১২ জন (জুন পর্যন্ত ৬ মাসে)
২০১৩ সালের শুরুতে এসে রাজনৈতিক দলের মিছিল সমাবেশ বানচালে সাউন্ড গ্রেনেড ও গ্যাস গ্রেনেডের নিয়মিত ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
গণপিটুনিতে নিহত ৬৪৯
বর্তমান সরকারের সাড়ে ৪ বছরে সারা দেশে গণপিটুনিতে নিহত হন ৬৪৯ জন। সে হিসেবে প্রতি মাসে গণপিটুনিতে মৃত্যু ঘটেছে ১২ ব্যক্তির। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থাহীনতার কারণেই আইন হাতে তুলে নেয়ার প্রবণতা লক্ষ্যণীয়।
গণপিটুনিতে সাভারে ৬ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুর কথা স্মরণ করে এখনো আঁতকে ওঠেন অনেকে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক সন্দেহভাজনদের আটক করে, পরিবেশ তৈরি করে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার মতো জঘন্য ঘটনাও ঘটেছে এ সময়।
একনজরে গণপিটুনি
২০০৯ সালে ১২৭ জন।
২০১০ সালে ১৭৪ জন।
২০১১ সালে ১৬১ জন।
২০১২ সালে ১২৬ জন।
২০১৩ সালে ৬১ জন (জুন পর্যন্ত ৬ মাসে)
১৭ সাংবাদিক খুন
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের শাসনামলের সাড়ে ৪ বছরে ১৭ সাংবাদিক খুন হয়েছেন। এসময়ে আক্রমনের শিকার হয়েছেন ১০২৪ জন। এর মধ্যে ৬৮০ জন সাংবাদিক আহত, ২৩০ জন লাঞ্ছিত ও ২৯৩ জন হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন।
২০১২ সালে খুন হয়েছেন ৫ জন
২০১১ সালে খুন হয়েছেন ৪ জন
২০১০ সালে খুন হয়েছেন ৪ জন
২০০৯ সালে নিহত হয়েছেন ৪ জন

No comments:

Post a Comment