বগুড়ায় অজ্ঞাত লাশ হিসেবে দাফনের এক মাস তিনদিন পর নীলফামারী সদর থানায় পাঠানো লাশের ছবি দেখে নিখোঁজ শিবির নেতা মহিদুলের লাশ শনাক্ত করেছে পরিবারের সদস্যরা। গত ১লা ফেব্রুয়ারি বগুড়া আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা হিসেবে মহিদুলের লাশ দাফন করেছিল। নীলফামারী সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের সুখধন গ্রামের কস্ফারি আনোয়ার হোসেন ছেলে মহিদুল। সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্য ছিল। ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর জেলা সদরের রামগঞ্জ বাজারে এমপি আসাদুজ্জামান নূরের গাড়িবহরে হামলা ও আওয়ামী লীগের চারজন নেতাকর্মী হত্যার মামলার নয় নম্বর আসামি ছিলেন মহিদুল। মহিদুল ইসলামের খালা মমেনা বেগম, মামী রাশেদা খানম, বড় বোন আম্বিয়া ও আফরোজা বেগম জানান, ওই ঘটনার পর থেকে মহিদুল ও তার বন্ধু আতিক টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার দেবীডুবা গ্রামে সাথিয়া স্কুলের নিকটবর্তী আতিকের আত্মীয় বাবুল খানের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল।
এদিকে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখান থেকে মহিদুল ও আতিককে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। গ্রেফতারের পর ২০ জানুয়ারি আতিকের রক্তাক্ত লাশ নীলফামারীর সৈয়দপুরে পাওয়া গেলেও এতোদিন মহিদুলের কোন সন্ধান মিলেনি। তারা আরো জানায়, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নীলফামারী থানা থেকে কয়েকজন পুলিশ লাশের একটি ছবি দেখিয়ে বলেন, এই ছেলেটির লাশ গত ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার মোকামতলায় পাওয়া যায়। পরে তার কোনো পরিচয় না পেয়ে তাকে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা হয়েছে। ছবিটি দেখে আমরা সেটি মহিদুলের বলে শনাক্ত করি। বগুড়া মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক সানোয়ার হোসেন জানান, গত ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া মোকামতলা রহবল বাজারের উত্তর পাশে একটি উঁচু জমি থেকে এক অজ্ঞাতনামা যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের মাথার বাম পাশে কানের ওপরে গুলি ঢুকে তা ডান পাশ দিয়ে বের হয়ে গেছে। অনেক অনুসন্ধানের পরেও কেউ শনাক্ত করতে না পারায় ময়নাতদন্ত শেষে অজ্ঞাতনামা লাশ হিসেবে বগুড়া আঞ্জুমানে মফিদুল তাকে দাফন করে। দেশের সব থানায় লাশের ছবিসহ ম্যাসেজ দেয়ার পরে মঙ্গলবার জানা গেল তার বাড়ি নীলফামারী সদর উপজেলার রামগঞ্জ গ্রামে। নীলফামারী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) বাবুল আকতার জানান, ছবি দেখে মহিদুল ইসলামের পরিবারের লোকজন তাকে শনাক্ত করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর জেলা সদরের রামগঞ্জ বাজারে নীলফামারী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের গাড়িবহরে হামলা এবং পরে আওয়ামী-পুলিশের সঙ্গে এলাকাবাসী সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের চার জনসহ পাঁচজন নিহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি ও নিহত কৃষক লীগ নেতা খোরশেদ আলম চৌধুরীর ভাই রাশেদ আলম চৌধুরী বাদী হয়ে অপর একটি মামলা দায়ের করেন। নিহত খোরশেদ আলম চৌধুরীর ভাইয়ের দায়ের করা মামলার নয় নম্বর আসামি ছিল শিবির নেতা মহিদুল।
No comments:
Post a Comment