![](http://www.bdtomorrow.org/records/news/201312/60356_1.jpg)
পনের বছর বয়সী পাপ্পু ও ষোলো বছরের ইব্রাহিম ফিল্টার ‘পানির জার’ সরবরাহের কাজ করে শ্যামলী হাউজিং এলাকায়। হাউজিংয়ের ২ নম্বর প্রকল্পে কোম্পানির পানি পরিশোধন কেন্দ্রেও মাঝে-মধ্যে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। শুক্রবার রাতে ওই পরিশোধন কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছিল তারা। ওই রাতে তাদের আটক করে পুলিশ। শনিবার সকালে আদাবর থানায় ছুটে আসেন পাপ্পুর দরিদ্র বাবা মান্নান ও মা হেনা বেগম। বাবা মান্নান বলেন, ‘আমার ছেলেকে কোন অপরাধে ধরেছে জানি না। আমার ছেলে তো কোনো দল করে না। সে পানি বিক্রির কাজ করে। তাকে ক্যান ধরে আনল?’ শুধু পাপ্পু ও ইব্রাহিমই নয়, রাজধানীতে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে এমন শত শত নিরপরাধ লোকজনকে ধরা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যৌথ অভিযান নিয়ে সারা দেশের জনমনে চরম আতংক বিরাজ করছে। অতি প্রয়োজনীয় কাজকর্ম ছাড়া কেউ বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে আটকদের সংখ্যা। গাদাগাদি করে রাখা হচ্ছে হাজতখানায়। চাহিদা অনুযায়ী টাকা মিললে কাউকে কাউকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। আবার কাউকে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে পেন্ডিং মামলায়। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৮ দলীয় জোটের নেতাসহ ৭৬৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই নিরপরাধ।
অভিযোগ এসেছে, অভিযানের নামে অনেকের বাসা-বাড়ি ভাংচুরসহ তাণ্ডবলীলা চালানো হচ্ছে। মূলত সারা দেশেই গণগ্রেফতার চলছে। আটক থেকে নারী ও শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। ‘কিছু অতি উৎসাহী’ পুলিশ সদস্যের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি যারপরনাই ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন। বিশেষ করে ঢাকার কয়েকটি থানার ওসিরা অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। যাকে পাচ্ছেন তাকেই আটক বা গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আবার চাহিদা অনুযায়ী টাকা পেলেই ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।
পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা বলেছেন, গণগ্রেফতার বলে কিছু নেই। নিয়ম অনুযায়ী অভিযান চলছে। নিরপরাধ লোকদের কোনো হয়রানি করা হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুরে যুবদলের দুই নেতার বাড়িতে তাণ্ডবলীলা চালানোর পরও ওসি সালাউদ্দিন আহমেদ খানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া তো দূরের কথা তিরস্কার পর্যন্ত করা হয়নি। তবে উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজ রোববার নয়াপল্টনে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ নামে অভিযাত্রা কর্মসূচি হওয়ার কথা। এ কর্মসূচিকে সামনে রেখে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান শুরু করে সরকার। ধরপাকড় থেকে শিশু ও নারীদেরও রেহাই মিলছে না। বেডরুম থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় কলেজপড়ুয়া তরুণীদের থানায় নিয়ে আসছে পুলিশ। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কিন্তু পুলিশ বেপরোয়া।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মিরপুরে যুবদল উত্তরের সভাপতি মামুন হাসান ও তার বড় ভাইয়ের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাণ্ডব চালায় পুলিশ। নারীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন পুলিশ সদস্যরা। যুবদল নেতাকে না পেয়ে বাসার আসবাবপত্র ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। ভাংচুর থেকে বাথরুমের কমোড পর্যন্ত রক্ষা পায়নি। এমনকি যুবদল নেতার বড় ভাই প্যারালাইসিস রোগী মাহবুব হাসানকে ক্রসফায়ারের হুমকিও দেয়া হয়। মাহবুব হাসান অভিযোগ করেন, তাণ্ডবলীলার সঙ্গে মিরপুর থানার ওসি সালাউদ্দিন আহমেদ খান সরাসরি জড়িত। তিনি নিজ হাতে কলেজপড়–য়া মেয়ের শরীরে পর্যন্ত হাত দিয়েছেন। আমি প্যারাইসিস রোগী। অথচ তিনি আমাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে লাথি মেরে নিচে ফেলে দেন। ’৭১ সালে পাকিস্তানিরা যে কাজ করতে পারেনি সেই কাজ ওসি সালাউদ্দিন সাহেব করেছেন।
মাহবুব হাসান আরও বলেন, অভিযানের সময় এমন কিছু জিনিস নেই তা ভাংচুর করা হয়নি। অকথ্য ভাষায় তিনি গালিগালাজ করেছেন। পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। ভোরবেলায় কলেজপড়–য়া মেয়েসহ ৩ জনকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। রাজনীতি করে আমার ভাই। বাসার মহিলারা তো কোনো দোষ করেনি। তাদের কেন পুলিশ নাজেহাল করল। এর বিচার আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিলাম। শুত্রবার সকালে সাবেক কমিশনার রুনু আক্তারের বাসায় অভিযান চালায় মিরপুর থানা পুলিশ। তাকে না পেয়ে তার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ১৩ বছরের সন্তান আমিন মোহাম্মদ ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি-পড়–য়া মেয়ে শারমিনকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। সারাদিন আটকে রেখে গতকাল রাতে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। বাসার তত্ত্বাবধায়ক সামিউরকে আটক করা হলেও তাকে ছাড়া হয়নি। মিরপুরের মতো শ্যামপুর, যাত্রাবাড়ী, কোতোয়ালি, গেণ্ডারিয়া, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জসহ আরও কয়েকটি থানার ওসিরা অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। মিরপুর থানার ওসির নেতৃত্বে বাসায় হামলা ও ভাংচুর হলে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা দূরের কথা, তিরস্কার পর্যন্ত করা হয়নি। ডিএমপি সদর দফতরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ওসির বাবার ছাত্র হওয়ায় তিনি বেশি বেপরোয়া বলে জানান পুলিশের অপর এক কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সালাউদ্দিনের মতো কিছু পুলিশ কর্মকর্তার জন্য পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের পাকড়াও করতে গিয়ে সাধারণ লোকজন গ্রেফতার হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বইছে। সর্বত্র গ্রেফতার আতংক বিরাজ করছে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক যা বললেন : বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’তে সব ধরনের সহিংসতা মোকাবেলায় আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ তার অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে। শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আইজিপি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। নিরাপত্তার স্বার্থে সচেতন জনগণকে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে আইজিপি বলেন, কেউ যদি নাশকতা বা সহিংসতার চেষ্টা করে, তবে পুলিশ আইনগতভাবে যে ক্ষমতা পায় তার সবই প্রয়োগ করবে। সারা দেশে গণগ্রেফতার সম্পর্কে তিনি বলেন, সারা দেশে গণগ্রেফতার হচ্ছে- এমন তথ্য সঠিক নয়। প্রতিদিন শুধু ঢাকা মহানগরীতে দেড় থেকে দু’শ অপরাধী গ্রেফতার হচ্ছে। সালতামামি বা অপরাধ পরিসংখ্যান গবেষণা করা হলে দেখা যাবে, পুলিশ নিয়মিত গ্রেফতার করছে। তবে যদি বিরোধীদলীয় নেতার অফিস বা বাসার সামনে থেকে এবং যৌথ বাহিনী নিরপরাধ কাউকে গ্রেফতার করে তা তদন্ত করে দেখা যাবে। পুলিশ কোনো যানবাহন চলাচলে বাধা দিচ্ছে না উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, পুলিশ প্রতিটি ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ করে আসছে। রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচির পক্ষে-বিপক্ষে পুলিশের অবস্থান নেই। যানবাহন চালানোর দায়িত্ব মালিক বা চালকের, এখানে পুলিশ বাধা দেয়ার ভূমিকা পালন করবে না।
আটক ৭৬৫ জন : মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, শুক্রবার রাত থেকে গতকাল বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৭৬৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তার মধ্যে বেশির ভাগ নিরপরাধ। পুলিশ বলছে, তারা সবাই জামায়াত-শিবির ও বিএনপির ক্যাডার। তাণ্ডবলীলার সঙ্গে ওরা সরাসরি জড়িত। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, পুলিশ রাস্তা থেকে নিরীহ পথচারী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের তুলে নিয়ে সারাদিন টহল গাড়িতে করে ঘুরিয়ে আটক ব্যক্তিদের আÍীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নগদ অর্থ আদায় করে ছেড়ে দিচ্ছে। উৎকোচ আদায়ে পুলিশের এই পুরনো কৌশল এখন যথেচ্ছভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে।
অভিযোগ এসেছে, অভিযানের নামে অনেকের বাসা-বাড়ি ভাংচুরসহ তাণ্ডবলীলা চালানো হচ্ছে। মূলত সারা দেশেই গণগ্রেফতার চলছে। আটক থেকে নারী ও শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। ‘কিছু অতি উৎসাহী’ পুলিশ সদস্যের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি যারপরনাই ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন। বিশেষ করে ঢাকার কয়েকটি থানার ওসিরা অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। যাকে পাচ্ছেন তাকেই আটক বা গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আবার চাহিদা অনুযায়ী টাকা পেলেই ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।
পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা বলেছেন, গণগ্রেফতার বলে কিছু নেই। নিয়ম অনুযায়ী অভিযান চলছে। নিরপরাধ লোকদের কোনো হয়রানি করা হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুরে যুবদলের দুই নেতার বাড়িতে তাণ্ডবলীলা চালানোর পরও ওসি সালাউদ্দিন আহমেদ খানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া তো দূরের কথা তিরস্কার পর্যন্ত করা হয়নি। তবে উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজ রোববার নয়াপল্টনে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ নামে অভিযাত্রা কর্মসূচি হওয়ার কথা। এ কর্মসূচিকে সামনে রেখে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান শুরু করে সরকার। ধরপাকড় থেকে শিশু ও নারীদেরও রেহাই মিলছে না। বেডরুম থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় কলেজপড়ুয়া তরুণীদের থানায় নিয়ে আসছে পুলিশ। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কিন্তু পুলিশ বেপরোয়া।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মিরপুরে যুবদল উত্তরের সভাপতি মামুন হাসান ও তার বড় ভাইয়ের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাণ্ডব চালায় পুলিশ। নারীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন পুলিশ সদস্যরা। যুবদল নেতাকে না পেয়ে বাসার আসবাবপত্র ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। ভাংচুর থেকে বাথরুমের কমোড পর্যন্ত রক্ষা পায়নি। এমনকি যুবদল নেতার বড় ভাই প্যারালাইসিস রোগী মাহবুব হাসানকে ক্রসফায়ারের হুমকিও দেয়া হয়। মাহবুব হাসান অভিযোগ করেন, তাণ্ডবলীলার সঙ্গে মিরপুর থানার ওসি সালাউদ্দিন আহমেদ খান সরাসরি জড়িত। তিনি নিজ হাতে কলেজপড়–য়া মেয়ের শরীরে পর্যন্ত হাত দিয়েছেন। আমি প্যারাইসিস রোগী। অথচ তিনি আমাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে লাথি মেরে নিচে ফেলে দেন। ’৭১ সালে পাকিস্তানিরা যে কাজ করতে পারেনি সেই কাজ ওসি সালাউদ্দিন সাহেব করেছেন।
মাহবুব হাসান আরও বলেন, অভিযানের সময় এমন কিছু জিনিস নেই তা ভাংচুর করা হয়নি। অকথ্য ভাষায় তিনি গালিগালাজ করেছেন। পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। ভোরবেলায় কলেজপড়–য়া মেয়েসহ ৩ জনকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। রাজনীতি করে আমার ভাই। বাসার মহিলারা তো কোনো দোষ করেনি। তাদের কেন পুলিশ নাজেহাল করল। এর বিচার আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিলাম। শুত্রবার সকালে সাবেক কমিশনার রুনু আক্তারের বাসায় অভিযান চালায় মিরপুর থানা পুলিশ। তাকে না পেয়ে তার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ১৩ বছরের সন্তান আমিন মোহাম্মদ ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি-পড়–য়া মেয়ে শারমিনকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। সারাদিন আটকে রেখে গতকাল রাতে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। বাসার তত্ত্বাবধায়ক সামিউরকে আটক করা হলেও তাকে ছাড়া হয়নি। মিরপুরের মতো শ্যামপুর, যাত্রাবাড়ী, কোতোয়ালি, গেণ্ডারিয়া, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জসহ আরও কয়েকটি থানার ওসিরা অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। মিরপুর থানার ওসির নেতৃত্বে বাসায় হামলা ও ভাংচুর হলে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা দূরের কথা, তিরস্কার পর্যন্ত করা হয়নি। ডিএমপি সদর দফতরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ওসির বাবার ছাত্র হওয়ায় তিনি বেশি বেপরোয়া বলে জানান পুলিশের অপর এক কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সালাউদ্দিনের মতো কিছু পুলিশ কর্মকর্তার জন্য পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের পাকড়াও করতে গিয়ে সাধারণ লোকজন গ্রেফতার হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বইছে। সর্বত্র গ্রেফতার আতংক বিরাজ করছে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক যা বললেন : বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’তে সব ধরনের সহিংসতা মোকাবেলায় আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ তার অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে। শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আইজিপি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। নিরাপত্তার স্বার্থে সচেতন জনগণকে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে আইজিপি বলেন, কেউ যদি নাশকতা বা সহিংসতার চেষ্টা করে, তবে পুলিশ আইনগতভাবে যে ক্ষমতা পায় তার সবই প্রয়োগ করবে। সারা দেশে গণগ্রেফতার সম্পর্কে তিনি বলেন, সারা দেশে গণগ্রেফতার হচ্ছে- এমন তথ্য সঠিক নয়। প্রতিদিন শুধু ঢাকা মহানগরীতে দেড় থেকে দু’শ অপরাধী গ্রেফতার হচ্ছে। সালতামামি বা অপরাধ পরিসংখ্যান গবেষণা করা হলে দেখা যাবে, পুলিশ নিয়মিত গ্রেফতার করছে। তবে যদি বিরোধীদলীয় নেতার অফিস বা বাসার সামনে থেকে এবং যৌথ বাহিনী নিরপরাধ কাউকে গ্রেফতার করে তা তদন্ত করে দেখা যাবে। পুলিশ কোনো যানবাহন চলাচলে বাধা দিচ্ছে না উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, পুলিশ প্রতিটি ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ করে আসছে। রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচির পক্ষে-বিপক্ষে পুলিশের অবস্থান নেই। যানবাহন চালানোর দায়িত্ব মালিক বা চালকের, এখানে পুলিশ বাধা দেয়ার ভূমিকা পালন করবে না।
আটক ৭৬৫ জন : মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, শুক্রবার রাত থেকে গতকাল বিকাল ৪টা পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৭৬৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তার মধ্যে বেশির ভাগ নিরপরাধ। পুলিশ বলছে, তারা সবাই জামায়াত-শিবির ও বিএনপির ক্যাডার। তাণ্ডবলীলার সঙ্গে ওরা সরাসরি জড়িত। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, পুলিশ রাস্তা থেকে নিরীহ পথচারী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের তুলে নিয়ে সারাদিন টহল গাড়িতে করে ঘুরিয়ে আটক ব্যক্তিদের আÍীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নগদ অর্থ আদায় করে ছেড়ে দিচ্ছে। উৎকোচ আদায়ে পুলিশের এই পুরনো কৌশল এখন যথেচ্ছভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে।
No comments:
Post a Comment