Wednesday, 7 May 2014

ফিরে আসছে আওয়ামীলীগের সেইসব 'গুণধরের' স্মৃতি!

ফিরে আসছে সেইসব 'গুণধরের' স্মৃতি!
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত হত্যার ঘটনায় যে র‍্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে একজন হলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাইদ মাহমুদ। তিনি নারায়ণগঞ্জে র‍্যাব-১১ এর কমান্ডিং অফিসার ছিলেন। হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।
সাত খুনের ঘটনায় আলোচনা যতোই গভীরে ঢুকছে ততোটাই অভিযুক্ত হচ্ছেন মায়ার পরিবারের এই সদস্য। অবশ্য শুধু তিনি নন, তার সাথে ত্রাণমন্ত্রীর ছেলের নামও এসেছে। নিহত কাউন্সিলর নজরুলের পরিবারের ভাষ্যমতে, মন্ত্রীপুত্র ওই ঘটনায় লেনদেনের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখেন।

আগে অনেক প্রভাবশালী নেতার সন্তানরা নানা অপকর্মের সাথে যুক্ত হয়েছেন। এবার সেই তালিকায় অভিযুক্ত হলো জামাতার নামও। সেই সাথে আলোচনা সমালোচনায় চলে আসছে নেতা-পুত্রদের অতীত কর্মকাণ্ডও।
'৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহনের পর দেশে যেসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হয় তার মধ্যে অনেকগুলো আলোচিত ঘটনার সাথেই যুক্ত ছিলেন তখনকার প্রভাবশালী মন্ত্রী এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতার ছেলেরা। সেই সময় মায়ার ছেলে দীপু চৌধুরীর নামও ছিলো সেই সমালোচিতদের তালিকায়। রীতিমত আত্মঙ্কের নাম হয়ে ওঠেন দীপু চৌধুরীসহ বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতার ছেলেরা। তাদের সেই সব কর্মকাণ্ডে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে দেশজুড়ে।
সম্প্রতি সেই মায়ারই জামাতার নাম যুক্ত হওয়ায় অনেকেই বলতে শুরু করছেন, এবারও কি সেই পথেই এগুচ্ছে আওয়ামী লীগ?
৯৬ সালে ক্ষমতা গ্রহনের পর যেসব প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের ছেলেরা নানা অপকর্ম করে দেশব্যাপী সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন তার কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরা হলো-
মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলে দীপু : ৯৬ সালে আওয়ামী নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। সেই সময় ঢাকায় বিভিন্ন এলাকায় জমি দখলসহ নানা অবৈধ কর্মকাণ্ডের সাথে নাম জড়িয়ে যায় দীপু চৌধুরীর। উত্তরায় ঠিকাদার তরাজউদ্দিন হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন দিপু।
আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে সাদেক, মইন, আশিক : একই আমলে সংসদের চিফ হুইপ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও সন্ত্রাসের মদদ দেয়ায় পুরো মেয়াদ জুড়েই আলোচনায় ছিলো তার ছেলেরা। আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর বড় ছেলে সাদেক আবদুল্লাহ কলাবাগানে বহুতল বিশিষ্ট একটি বাড়ি দখল করে তখন আলোচিত হন।
এসএ মালেকের ছেলে মামুন : শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন এসএ মালেক। তার ছেলে ডা. মামুন বিএমএতে দলীয়করণ এবং সন্ত্রাসীদের গডফাদার হিসেবে পরিচিত হন। স্বাস্থ্য সেক্টরে হয়ে ওঠেন গডফাদার।
কামাল মজুমদারের ছেলে জুয়েল : তরুণ ব্যবসায়ী শিপুকে গুলি করে হত্যার পর আলোচনায় আসেন আওয়ামী লীগের এমপি কামাল মজুমদারের ছেলে জুয়েল।
সাবেক মেয়র হানিফের ছেলে সাইদ খোকন : সাবেক মেয়র হানিফের ছেলে সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তৎকালীন সময়ে গুলশান লেক দখল করে বাড়ি তৈরি ও সন্ত্রাসীদের গডফাদার হিসেবে।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের ছেলে সুমু: তৎকালীনমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে সুমু গাড়িতে একে-৪৭ রাইফেলসহ গ্রেপ্তার হন। এ ঘটনাটি বেশ আলোচিত হয় সেই সময়ে।
মকবুল হোসেনের ছেলে মাসুদ : তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি মকবুল হোসেনের ছেলে মাসুদুর রহমান বহু চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে আলোচনায় ছিলেন তারা।
আখতারুজ্জামান বাবুর ছেলে জাভেদ : তৎকালীন সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান বাবুর ছেলে জাভেদ চট্টগ্রাম চেম্বার দখল করে নিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন।
লক্ষীপুরের তাহের বাহিনী : লক্ষীপুরের মূর্তিমান আত্মঙ্কের নাম এম এ তাহের ও তার ছেলে বিপ্লব। তাহের বাহিনী হিসেবে পরিচিত সন্ত্রাসী বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন তার ছেলে বিপ্লব। তারা ওই অঞ্চলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন যা সরকারের ভাবমূর্তিকে দেশব্যাপী সংকটে ফেলে দেয়।
দীর্ঘ ২১ বছর পর '৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছিলো সন্ত্রাসের কারণে। এসব সন্ত্রাসে একদিকে যেমন দলীয় নেতাকর্মীসহ শীর্ষ নেতারা যুক্ত ছিলেন, অন্যদিকে তাদের অনেকেরই পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন নানা অপকর্মের সাথে যুক্ত। প্রভাবশালী পরিবারের সদস্যরা এসব কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকায় অনেকেই প্রতিকার পায়নি। সঠিক বিচারও পায়নি। যার ফল পরবর্তী নির্বাচনে ভোগ করতে হয়েছে।
http://www.poriborton.com/post/54368/%E0%A6%AB%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%9B%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%AC-%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%A3%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A6%BF

No comments:

Post a Comment