![](http://imagesrv1.amardeshonline.com/201310/news/P1_shotti-e-ki-prodhanmontr.jpg)
কথিত ‘জাতিসংঘের সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড’ নিয়ে ধাপ্পাবাজির চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। এবার দ্বিতীয় বারের মতো এই পুরস্কার ‘অর্জনের’ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গতকাল মহা ধুমধাম করে গণসংবর্ধনা দেয়া হলেও অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিনি এই পুরস্কারটি পাননি। তাছাড়া সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড জাতিসংঘের কোনো পুরস্কারও নয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের তরফ থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে সাফল্য পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এবারও জাতিসংঘের সাউথ সাউথ পুরস্কার দেয়া হয়েছে। নিউইয়র্কে পৌঁছেই গতকাল তিনি এই পুরস্কারটি গ্রহণ করেছেন।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর সরকার নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্যবিমোচনে বাংলাদেশের অসামান্য অবদান এবং দারিদ্র্য হ্রাসে তার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে’ সাউথ-সাউথ পুরস্কার পেয়েছেন। দেশের সব প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার খবরটি প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়। কিন্তু প্রকৃত তথ্য একেবারেই ভিন্ন।
সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড নামের সংগঠনটি ২০১৩ সালে যাদের পুরস্কৃত করেছে তাদের মধ্যে শেখ হাসিনার নাম নেই। তিনি পেয়েছেন সাউথ সাউথ নিউজের একটি পুরস্কার, যেটি সাউথ সাউথ পুরস্কারের একটি পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান এবং এমডিজির সাফল্য নিয়ে খবর ভাগাভাগির ওয়েবসাইট। সাইটটি এতটাই অবহেলিত যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এবার যে পুরস্কার দেয়া হয়েছে সেই খবরটিই তাদের সাইটে নেই।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড জাতিসংঘের কোনো পুরস্কারও নয়। জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তাও পুরস্কারটি তুলে দেন না। সম্ভবত সাউথ সাউথ নামের এই অখ্যাত পুরস্কারটি নিয়ে বাংলাদেশেই বেশি মাতামাতি হচ্ছে।
সাউথ সাউথ পুরস্কার পাননি শেখ হাসিনা : সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড নামে সংগঠনটির একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে (southsouthawards.com)। ২০১৩ সালে কারা এই পুরস্কার পেয়েছেন এখানে তার তালিকা দেয়া হয়েছে।
‘গ্লোবার গভর্ন্যান্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ নামে এই পুরস্কার দেয়া হয় গত ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের ওয়ালডর্ফ অ্যাস্টোরিয়ায়। ১৯ সেপ্টেম্বর সংগঠনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এবার এই পুরস্কার পেয়েছেন কোস্টারিকার প্রেসিডেন্ট লরা শিলশিলা মিরান্ডা, বাইরাইনের প্রধানমন্ত্রী খলিফা বিন সালমান আল খলিফা এবং জিফির প্রধানমন্ত্রী জোসাইয়া বরেক বাইনিমারামা।
এছাড়া টেকসই উন্নয়ন ও তথ্যপ্রযুক্তিতে অবদান রাখার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলা, তার সাবেক স্ত্রী গ্রাসা ম্যাশেল এবং আমেরিকার সঙ্গীতশিল্পী ডেভিড পাইচকেও এই পুরস্কার দেয়া হয়।
লক্ষণীয় এবারের এই তালিকায় কোথাও শেখ হাসিনার নাম নেই।
পুরস্কারটি প্রদান করা হয়, ২২ সেপ্টেম্বর রোববার। প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে পৌঁছান সোমবার। সরকারের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হয়, তিনি পরে পুরস্কারটি গ্রহণ করেছেন।
সাউথ সাউথ পুরস্কার কী : এমডিজি অর্জনে সাফল্য দেখিয়েছে—এ রকম দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, রাজনীতিক এবং বেসরকারি খাতের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে উত্সাহিত করার জন্যই এই সাউথ সাউথ পুরস্কার বা ‘গ্লোবার গভর্ন্যান্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ দেয়া হয়।
আফ্রিকার দেশ এন্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডার জাতিসংঘের স্থানীয় মিশন, আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন, জাতিসংঘের লোকপ্রশাসন নেটওয়ার্ক (ইউএনপ্যান), দ্য ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর সাউথ সাউথ কোঅপারেশন (আইওএসএসসি), জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা এবং সাউথ সাউথ নিউজের আয়োজনে ২০১১ সাল থেকে সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড দেয়া হচ্ছে।
পুরস্কার প্রদানে সহায়তা করে থাকে জাতিসংঘে তৃতীয় বিশ্বের কয়েকটি দেশের স্থায়ী মিশন। এর মধ্যে রয়েছে মালাউই, ডমিনিকান প্রজাতন্ত্র, জাম্বিয়া, তাজিকিস্তান, এল সালভাদর ও হন্ডুরাস।
এটি কোনো উল্লেখ করার মতো কোনো পুরস্কারও নয়। ২০১১ সালেও শেখ হাসিনা এই পুরস্কার পান। এবারও যদি তিনি পুরস্কার পেতেন তাহলে তিন বার প্রদত্ত এই পুরস্কারের মধ্যে দু’বারই পেতেন শেখ হাসিনা। এটিই যদি সত্য হয়, তাহলে সেই পুরস্কারের মর্যাদা বলতে তো কিছু অবশিষ্ট থাকে না।
শেখ হাসিনা তাহলে কী পেয়েছেন : আওয়ামী লীগের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশ করে বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেলসন ম্যান্ডেলাসহ অন্য নেতাদের সঙ্গে এবার সাউথ সাউথ পুরস্কার গ্রহণ করেছেন (www.albd.org/index.php/en/updates/news/253-pm-receives-south-south-award)। কিন্তু এর সঙ্গে যে ছবিটি দেয়া হয়েছে, তাতে দেখা যায় সাউথ সাউথ নিউজ লেখা।
আগেই বলা হয়েছে, সাউথ সাউথ নিউজ ‘গ্লোবার গভর্ন্যান্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ বা সাউথ সাউথ পুরস্কারের একটি পৃষ্ঠপোষক।
কাজেই তারা এই পুরস্কার দিতে পারে না। কাজেই প্রধানমন্ত্রী যে পুরস্কারটি পেয়েছেন, তা সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড নয়, অন্য কোনো পুরস্কার।
কী ছিল সরকারি ভাষ্যে : সরকারনিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা বাসস গত ২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে জানায়, প্রধানমন্ত্রী এবারও সাউথ সাউথ পুরস্কার পেয়েছেন। ‘দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতি আইওএসএসসির’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্যবিমোচনে বাংলাদেশের অসামান্য অবদান এবং দারিদ্র্য হ্রাসে তার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে এখানে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন।
দ্য ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন (আইওএসএসসি) সোমবার সন্ধ্যায় তার সদর দফতরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়।
দক্ষিণ-দক্ষিণ অঞ্চলের দেশগুলোর ত্রিমুখী সহযোগিতায় জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আইওএসএসসি গঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, সাউথ-সাউথ সদর দফতরের প্রেসিডেন্ট ও সাউথ-সাউথ নিউজ অ্যাম্বাসেডর ফ্রান্সিস লরেঞ্জো সংস্থাটির সদর দফতরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান এবং তার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন।
দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের জন্য এ পুরস্কার দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী আইওএসএসসি এবং বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রী, ফার্স্ট লেডি এবং আইওএসএসসিভুক্ত দেশগুলোর সরকারপ্রধানদের ধন্যবাদ জানান।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সময় প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, তার মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, আওয়ামী লীগের নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, জাসদ নেতা মঈনুদ্দিন খান বাদল এমপি, পার্লামেন্ট সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে আবদুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাসসের ওই সংবাদটি তথ্যনির্ভর নয় এবং এজন্য আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচারণাও নেহায়েতই মিথ্যাচার।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন কাভার করতে আমার দেশ-এর স্টাফ রিপোর্টার মাহাবুবুর রহমানসহ বহু বাংলাদেশী সাংবাদিক নিউইয়র্কে অবস্থান করলেও ওই অনুষ্ঠানে কোনো সাংবাদিকই ছিলেন না। বাসসসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে শুধু সরকারি ভাষ্য প্রচার করা হয়েছে। কোনো কোনো গণমাধ্যম সূত্র উল্লেখ না করেই খবরটি প্রচার করেছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য গত রাতে প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তারা দু’জনই ওই পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের তরফ থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে সাফল্য পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এবারও জাতিসংঘের সাউথ সাউথ পুরস্কার দেয়া হয়েছে। নিউইয়র্কে পৌঁছেই গতকাল তিনি এই পুরস্কারটি গ্রহণ করেছেন।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর সরকার নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্যবিমোচনে বাংলাদেশের অসামান্য অবদান এবং দারিদ্র্য হ্রাসে তার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে’ সাউথ-সাউথ পুরস্কার পেয়েছেন। দেশের সব প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার খবরটি প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়। কিন্তু প্রকৃত তথ্য একেবারেই ভিন্ন।
সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড নামের সংগঠনটি ২০১৩ সালে যাদের পুরস্কৃত করেছে তাদের মধ্যে শেখ হাসিনার নাম নেই। তিনি পেয়েছেন সাউথ সাউথ নিউজের একটি পুরস্কার, যেটি সাউথ সাউথ পুরস্কারের একটি পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান এবং এমডিজির সাফল্য নিয়ে খবর ভাগাভাগির ওয়েবসাইট। সাইটটি এতটাই অবহেলিত যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এবার যে পুরস্কার দেয়া হয়েছে সেই খবরটিই তাদের সাইটে নেই।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড জাতিসংঘের কোনো পুরস্কারও নয়। জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তাও পুরস্কারটি তুলে দেন না। সম্ভবত সাউথ সাউথ নামের এই অখ্যাত পুরস্কারটি নিয়ে বাংলাদেশেই বেশি মাতামাতি হচ্ছে।
সাউথ সাউথ পুরস্কার পাননি শেখ হাসিনা : সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড নামে সংগঠনটির একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে (southsouthawards.com)। ২০১৩ সালে কারা এই পুরস্কার পেয়েছেন এখানে তার তালিকা দেয়া হয়েছে।
‘গ্লোবার গভর্ন্যান্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ নামে এই পুরস্কার দেয়া হয় গত ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের ওয়ালডর্ফ অ্যাস্টোরিয়ায়। ১৯ সেপ্টেম্বর সংগঠনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এবার এই পুরস্কার পেয়েছেন কোস্টারিকার প্রেসিডেন্ট লরা শিলশিলা মিরান্ডা, বাইরাইনের প্রধানমন্ত্রী খলিফা বিন সালমান আল খলিফা এবং জিফির প্রধানমন্ত্রী জোসাইয়া বরেক বাইনিমারামা।
এছাড়া টেকসই উন্নয়ন ও তথ্যপ্রযুক্তিতে অবদান রাখার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলা, তার সাবেক স্ত্রী গ্রাসা ম্যাশেল এবং আমেরিকার সঙ্গীতশিল্পী ডেভিড পাইচকেও এই পুরস্কার দেয়া হয়।
লক্ষণীয় এবারের এই তালিকায় কোথাও শেখ হাসিনার নাম নেই।
পুরস্কারটি প্রদান করা হয়, ২২ সেপ্টেম্বর রোববার। প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে পৌঁছান সোমবার। সরকারের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হয়, তিনি পরে পুরস্কারটি গ্রহণ করেছেন।
সাউথ সাউথ পুরস্কার কী : এমডিজি অর্জনে সাফল্য দেখিয়েছে—এ রকম দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, রাজনীতিক এবং বেসরকারি খাতের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে উত্সাহিত করার জন্যই এই সাউথ সাউথ পুরস্কার বা ‘গ্লোবার গভর্ন্যান্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ দেয়া হয়।
আফ্রিকার দেশ এন্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডার জাতিসংঘের স্থানীয় মিশন, আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন, জাতিসংঘের লোকপ্রশাসন নেটওয়ার্ক (ইউএনপ্যান), দ্য ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর সাউথ সাউথ কোঅপারেশন (আইওএসএসসি), জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা এবং সাউথ সাউথ নিউজের আয়োজনে ২০১১ সাল থেকে সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড দেয়া হচ্ছে।
পুরস্কার প্রদানে সহায়তা করে থাকে জাতিসংঘে তৃতীয় বিশ্বের কয়েকটি দেশের স্থায়ী মিশন। এর মধ্যে রয়েছে মালাউই, ডমিনিকান প্রজাতন্ত্র, জাম্বিয়া, তাজিকিস্তান, এল সালভাদর ও হন্ডুরাস।
এটি কোনো উল্লেখ করার মতো কোনো পুরস্কারও নয়। ২০১১ সালেও শেখ হাসিনা এই পুরস্কার পান। এবারও যদি তিনি পুরস্কার পেতেন তাহলে তিন বার প্রদত্ত এই পুরস্কারের মধ্যে দু’বারই পেতেন শেখ হাসিনা। এটিই যদি সত্য হয়, তাহলে সেই পুরস্কারের মর্যাদা বলতে তো কিছু অবশিষ্ট থাকে না।
শেখ হাসিনা তাহলে কী পেয়েছেন : আওয়ামী লীগের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশ করে বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেলসন ম্যান্ডেলাসহ অন্য নেতাদের সঙ্গে এবার সাউথ সাউথ পুরস্কার গ্রহণ করেছেন (www.albd.org/index.php/en/updates/news/253-pm-receives-south-south-award)। কিন্তু এর সঙ্গে যে ছবিটি দেয়া হয়েছে, তাতে দেখা যায় সাউথ সাউথ নিউজ লেখা।
আগেই বলা হয়েছে, সাউথ সাউথ নিউজ ‘গ্লোবার গভর্ন্যান্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ বা সাউথ সাউথ পুরস্কারের একটি পৃষ্ঠপোষক।
কাজেই তারা এই পুরস্কার দিতে পারে না। কাজেই প্রধানমন্ত্রী যে পুরস্কারটি পেয়েছেন, তা সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড নয়, অন্য কোনো পুরস্কার।
কী ছিল সরকারি ভাষ্যে : সরকারনিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা বাসস গত ২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে জানায়, প্রধানমন্ত্রী এবারও সাউথ সাউথ পুরস্কার পেয়েছেন। ‘দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতি আইওএসএসসির’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্যবিমোচনে বাংলাদেশের অসামান্য অবদান এবং দারিদ্র্য হ্রাসে তার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে এখানে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন।
দ্য ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন (আইওএসএসসি) সোমবার সন্ধ্যায় তার সদর দফতরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়।
দক্ষিণ-দক্ষিণ অঞ্চলের দেশগুলোর ত্রিমুখী সহযোগিতায় জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আইওএসএসসি গঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, সাউথ-সাউথ সদর দফতরের প্রেসিডেন্ট ও সাউথ-সাউথ নিউজ অ্যাম্বাসেডর ফ্রান্সিস লরেঞ্জো সংস্থাটির সদর দফতরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান এবং তার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন।
দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের জন্য এ পুরস্কার দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী আইওএসএসসি এবং বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রী, ফার্স্ট লেডি এবং আইওএসএসসিভুক্ত দেশগুলোর সরকারপ্রধানদের ধন্যবাদ জানান।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সময় প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, তার মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, আওয়ামী লীগের নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, জাসদ নেতা মঈনুদ্দিন খান বাদল এমপি, পার্লামেন্ট সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে আবদুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাসসের ওই সংবাদটি তথ্যনির্ভর নয় এবং এজন্য আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচারণাও নেহায়েতই মিথ্যাচার।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন কাভার করতে আমার দেশ-এর স্টাফ রিপোর্টার মাহাবুবুর রহমানসহ বহু বাংলাদেশী সাংবাদিক নিউইয়র্কে অবস্থান করলেও ওই অনুষ্ঠানে কোনো সাংবাদিকই ছিলেন না। বাসসসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে শুধু সরকারি ভাষ্য প্রচার করা হয়েছে। কোনো কোনো গণমাধ্যম সূত্র উল্লেখ না করেই খবরটি প্রচার করেছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য গত রাতে প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তারা দু’জনই ওই পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
No comments:
Post a Comment